শিরোনাম
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : | ০৯:০৮ পিএম, ২০২০-১০-০৩
আসাদুজ্জামান বাবুল : হবিগঞ্জে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আরডিসি) উম্মে ইসরাতের বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা এলাকায় কাউকে কোনো তোয়াক্কা না করে ইচ্ছামতো প্রকল্প গ্রহণ, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি, বিধিভঙ্গ করে সরকারের অনুমোদন ছাড়াই বিদেশ ভ্রমণ, ঝুলন্ত ব্রীজ মেরামতের নামে টাকা আত্মসাতসহ নানান দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও তিনি এখনও ইচ্ছেমতো কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাকের ডগায়। অথচ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখেও তা না দেখার ভান করছেন।
জানা যায়, দুর্নীতির টাকা নিরাপদ করার জন্য আইনি ফাঁক-ফোকর দিয়ে নিজেকে নিরাপদ রাখার জন্য তিনি আগে থেকেই নানা রকম অপকৌশল তৈরি করে রেখেছেন। চতুর উম্মে ইসরাত তার নিজের ও বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের নামে একাউন্ট খুলে দুর্নীতির টাকা জমা করেন। রাজধানী ঢাকার মিরপুরে বসবাসকারী তার দ্বিতীয় বোন উম্মে হাবিবা রুমার মাধ্যমে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, মিরপুর ব্রাঞ্চে সেলিনা রহমান এবং সিদ্দিকী নামে একটি যৌথ একাউন্ট খুলে সেই একাউন্টে তিনি ঘুষের টাকা লেনদেন করেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
হবিগঞ্জে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আরডিসি) উম্মে ইসরাতের মা পারুল বেগম এবং মোতাহেরা বেগমের নামে চাঁদপুর পোষ্ট অফিসে কোটি টাকার স্ঞ্চয়পত্র রয়েছে। এখানেই হবিগঞ্জে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আরডিসি) উম্মে ইসরাতের দুর্নীতির শেষ নয়- দুবাই প্রবাসী মামা মাঈনুদ্দিনের কাছে হুন্ডির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা পাঠানোর অভিযোগ আছে। এছাড়াও চট্রগ্রামে বসবাসরত আরেক মামা সাইফুদ্দিনের কাছেও দুনীতির টাকা জমা রয়েছে বলে গুরুত্বর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উম্মে ইসরাত ২৮ ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে ২০১০ সালে চাকুরীতে যোগাদানের পর ব্রাক্ষণবাড়ীয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলায় সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মৌলভীবাজার জেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে কাজ করেন। পর্যাক্রমে তিনি মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর, মৌলভীবাজার সদর, সিলেট জেলার জকিগঞ্জ, সিলেট সদরে কর্মরত ছিলেন। পরে তাকে শাস্তিমূলকভাবে খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলায় নিবার্হী অফিসার হিসেবে বদলী করা হয়। সেখান থেকে ২০২০ সালের শুরুতেই পুনরায় সিলেট জেলায় ফিরে আসেন। কোনো বাধাই তাকে আটকে রাখতে পারেনি।
রামগড়ে থাকা অবস্থায় উম্মে ইসরাতের বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ ও পৌর এলাকার কাউকে কোনো তোয়াক্কা না করে ইচ্ছামতো প্রকল্প গ্রহণের অভিযোগ ওঠে। এমনকি রাষ্ট্রের নিবার্হী প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়েও বাজে মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে এ কমকর্তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তৎকালীন চট্রগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানান, ঝুলন্ত ব্রীজ-এর মেরামতের জন্য দুই লাখ টাকা বাজেট করে মাত্র ১২-১৫টি কাঠের তক্তা পরিবর্তন করে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেন। এমন বহু ঘটনার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আরডিসি) হবিগঞ্জ উম্মে ইসরাত এর নিজ নামে ৫০০,০০০/- পাঁচ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয় পত্র, যাহার নম্বর-পসপ-চ-০৩৫৮৮৫৪, ইস্টার্ণ ব্যাংক লিমিটেড ব্রাক্ষণবাড়িয়া ব্রাঞ্চ, মালিক খায়ের প্লাজা ৯৫ পাইকপাড়া জামে মসজিদ রোড ব্রাক্ষণবাড়িয়া শাখায় ১৭০০,০০০/- (সতের লাখ) টাকার ডিপোজিট, ব্যাংক এশিয়া লালদীঘির পাড় মেইন রোড সিলেট ব্রাঞ্চে, যাহার একাউন্ট নাম্বার-০৫৮৩৪০০১২৩৮, উক্ত ব্যাংক একাউন্টে ২৬/১০/২০১৭ ইং তারিখে তার একাউন্টে ১০,৮৯,০০০/-(দশ লাখ উননব্বই হাজার) টাকা জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও চাদঁপুর সদরে দুই কোটি টাকা মুল্যের একটি বাড়ীর জায়গা ও কুমিল্লা ডিসি অফিসের সামনে ফোজদারী মার্কেটে কোটি টাকা মূল্যের দুটি দোকান রয়েছে। যাহা জনৈক আব্দুল মান্নান, পিতা-মৃত নেকবর আলী, (দোকান নং-৩৭) এবং জনৈক আলম মিয়ার, পিতা-কালা মিয়া, (দোকান নং-৩৮) নিকট তিনি নগদ টাকায় ক্রয় করেছেন।
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, মিরপুর ব্রাঞ্চে সেলিনা রহমান এবং সিদ্দিকী নামে খোলা যৌথ সেই একাউন্টে যাহার নাম্বার-০৩১৩৪০০১১০৯। উক্ত একাউন্টে জামালউদ্দিন নামে জনৈক ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে ঐ একাউন্টে লাখ লাখ টাকা জমা রেখেছেন। এর মধ্যে কয়েকটি জমা রসিদের টাকার পরিমাণ উল্ল্যেখ করা হলো, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, মৌলভীবাজার ব্রাঞ্চ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ইং তারিখে ৩৫০,০০০/-(তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ইং তারিখে, ৪৫০,০০০/-(চার লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা, ৫ অক্টোবর ২০১৫ ইং তারিখে, ২৫০,০০০/- (দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা এবং ১৫ অকটোবর ২০১৫ইং তারিখে, ২৬০,০০০/-(দুই লাখ ষাট হাজার)টাকা জমা দিয়েছেন।
ব্যাংকে লাখ লাখ টাকা জমাদানকারী কে এই জামালউদ্দিন, অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে তার পরিচয়। তিনি আর কেউ নন, খোদ মৌলভীবাজার ডিসি অফিসের এমএলএসএস জামালউদ্দিন। আর তিনি এসব টাকা মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমির পক্ষে জমা দিয়েছেন মর্মে নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আরডিসি) হবিগঞ্জ উম্মে ইসরাত তার মা পারুল আক্তার এর নামে পূবালী ব্যাংক লিমিটেড কচুয়া চাঁদপুর ব্রাঞ্চে একাউন্ট করে তার দুর্নীতির টাকা জমা করার তথ্যও এসেছে দৈনিক আমাদের বাংলার হাতে। সেখানে দেখা যায়, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড সঞ্চয়ী হিসাব নাম্বার-৩০৩৫১০১৭৫৭০। উক্ত পূবালী ব্যাংক হিসাব নাম্বারে-৩১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ইং তারিখে, ২০০,০০০/-(দুই লাখ) টাকা, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ইং তারিখে- ৩০০,০০০/-(তিন লাখ) টাকা, ০৪/০৩/২০১৫ইং তারিখে-২০০,০০০/-(দুই লাখ) টাকা, ৩১ আগস্ট ২০১৫ইং তারিখে-১৫০,০০০/-(এক লাখ) টাকা জমা করা হয়েছে।
ভূমি জমা খারিজের ব্যাপারে বিপুল অংকের ঘুষ-দুর্নীতি শিরোনামে অভিযোগ এনেছেন ভুক্তভোগী, বাবুল চৌধুরী-মৌলভীবাজার, সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিস, শহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার, জজ কোর্ট। মো: কামরুল হাসান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, মৌলভীবাজার, স্বাক্ষরিত একটি দরখাস্থ দীঘদিন অতিবাহিত হলেও রহস্যজনকভাবে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তারা মৌলভীবাজার সদর ভুমি সহকারী উম্মে ইসরাত দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভুমি সচিব বরাবরে ১০ নভেম্বর ২০১৫ইং তারিখে এ আবেদন করেন।
অন্যদিকে ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে সংশ্লিষ্ট ভূমিমন্ত্রী বরাবরে মৌলভীবাজারের ২৪ জজকোর্ট রোড নিবাসী এইচএম হাসান, একই জেলার শাহ মোস্তফা সড়ক এলাকা নিবাসী শহীদ সরকার এবং একই জেলার ১২ সেন্ট্রাল রোডস্থ হোসাইন আহম্মদ হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) উম্মে ইসরাতের বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে দরখাস্ত করেছেন। রহস্যজনক ভাবে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও আলোর মুখ দেখেনি একটিও তদন্ত রিপোর্ট। একদিকে ভূক্তভোগীরা বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন আর প্রতিকার পাওয়ার জন্য প্রহর গুণছেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত উম্মে ইসরাত তার ঘনিষ্ঠজনদের কাছে দম্ভ করে বেড়ান, তার বিরুদ্ধে আবেদন-নিবেদন আর রিপোর্ট করে কিছুই করা যাবে না। ফলে প্রশ্ন উঠেছে তার খুঁটির জোর কোথায়?
উল্লেখ্য, উম্মে ইসরাত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আরডিসি) হবিগঞ্জ বেপরোয়া দুর্নীতির চিত্র। চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার চেয়ারম্যান বাড়ী ধনাইয়ার ইয়াকুব আলীর মেয়ে। ইয়াকুব আলীর তিন কন্যার মধ্যে উম্মে ইসরাত সবার বড়। দ্বিতীয় কন্যা উম্মে হাবিবা রুমা রাজধানীয় ঢাকার মিরপুরে স্বামীর সাথে বসবাস করেন এবং তৃতীয় কন্যা উম্মে তানজিলা এলিন বাবা-মায়ের সাথে চাঁদপুরের কচুয়ায় বসবাস করেন।
উম্মে ইসরাতের সীমাহীন দূর্নীতি আর অনিয়মের খুব সামান্যই লাইমলাইটে এসেছে। সংশ্লিষ্ট নিরপেক্ষ মহল কর্তৃক সামান্য অনুসন্ধানেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে চাঞ্চল্যকর তথ্য।জরুরি ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্ত হওয়া অতীব জরুরি। উম্মে ইসরাতের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি সময়ের দাবী- এমনটাই জানিয়েছে ভূক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্ট মহল।
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : নুর আমিনা : স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান'র ১০৪ তম জন্ম বার্...বিস্তারিত
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : মো: শরিফ ভূইয়া,রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, আওয়ামীলীগ, র...বিস্তারিত
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : বেলাল উদ্দিন আহম্মদ: কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল জনকল্যাণ ফোরামের উদ্যোগে ২৪ জন মেধাব...বিস্তারিত
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : শাহ আলম শফি : চট্টগ্রাম বিভাগে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্স শ্রেষ্ঠ স্থান অর্জন করায় বরুড়...বিস্তারিত
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : মো.শামীম আক্তার,রায়গঞ্জ(সিরাজগঞ্জ): স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ি ভোক্তার স্বার্থে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্...বিস্তারিত
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : শরীফ ভূইয়া,রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রূপগঞ্জ ইউনিয়নে &...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 gssnews 24 | Developed By Muktodhara Technology Limited