শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : | ০২:৩৩ পিএম, ২০২৩-০১-০৯
সেন্ট্রাল আলবার্টা (কানাডা) প্রতিনিধি : আজ "কক্সবাজার জেলার সামুদ্রিক শুকনো মাছের উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের উপর বিশ্লেষণ এবং নীল অর্থনীতি অর্জনে সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জসমূহের উপর গবেষক ও বিশেষজ্ঞ সমেত তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বক্তারা বলেছেন বাংলাদেশে বিকাশমান সমুদ্র অর্থনীতির সফলতা নির্ভর করছে এ খাতে সমণ্বিত উদ্যোগ গ্রহণের উপর। তারা কৌশলগত পরিকল্পনা প্রনয়ণ ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের উপর জোর দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত সামদ্রিকখাদ্য, শুকনো মাছ উৎপাদন, অন্ত: দেশীয় ও বৈদেশিক বিপণনের ক্ষেত্রে সকল বাধা ও প্রতিবন্ধকতা দূর করার আহ্বান জানান।
এতে সভাপতিত্ব করেন কানাডা প্রবাসী লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক, বাংলাদেশ নর্থ আমেরিকান জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার জাহিদ।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. আব্দুল জলিল চৌধুরী, ডিপার্টমেন্ট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং সাবেক মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম)। প্রধান আলোচক ছিলেন প্রফেসর ড. এস.এম. রফিকুজ্জামান, ডিন, ফিশারিজ অনুষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ। অধ্যাপক, গবেষক, শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক এবং স্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)এর সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. এস. জে আনোয়ার জাহিদ. প্রশিকার প্রোগ্রাম পরিচালক ,সাঈদ হাসান, উন্নয়ণ কনসালটেন্ট বাবু অশোক সরকার, আবেদ আহসান সাগর, মাহবুব উল আলম এবং অংশ গ্রহণ করেন খায়রুল আহসান মানিক, কৃষিবিদ মোয়াজ্জেম হোসাইন, নজরুল ইসলাম বাবুল, শামসুল হাবিব, শিরিন ফেরদৌসি, নাজমা রেশমী, ইভানা হোসাইন ও এসরার জাহিদ।
সম্মানিত অতিথি কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী তার ভাষণে বলেন, সমূদ্র অর্থনীতির সদ্ব্যবহার বাংলাদেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে পারে যদি আমরা এ খাতে প্রথাগত পদ্ধতির পরিবর্তে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারকে নিশ্চিত করতে পারি । ইতিমধ্যে সরকার কৌশলগত নানাহ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং বিদেশি কয়েকটি সংস্থা তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। এগুলোর মাঝে সমন্বয় সাধন ও চেলেন্জের বিষয়। বাংলাদেশে খাদ্য সংস্কৃতি পরিবর্তনের উপর আমাদের জোরারোপ করতে হবে এবং সামুদ্রিক-খাদ্যকে আমাদের খাদ্য তালিকায় নিতে হবে।
মূল প্রবন্ধে প্রফেসর ড. আব্দুল জলিল চৌধুরী বলেন, কক্সবাজারে মার্কেট ভ্যালু চেইন এর উপর গবেষণা ও প্রশিক্ষণ দান বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে এর সুফলতা আসতে শুরু করেছে। সাসটেইনেবল ব্লু ইকোনমির জন্য পরিবেশগত অবক্ষয় এবং সমুদ্রের পানির দূষণ কমাতে প্রয়োজনীয় নীতিনির্ধারণের উপর বাংলাদেশের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।
প্রধান আলোচক প্রফেসর ড. এস.এম. রফিকুজ্জামান বলেন কক্সবাজার জেলার সামুদ্রিক খাদ্য ও শুকনো মাছের স্বাস্থ্যসম্মত উৎপাদন ও এগুলো বাজারজাতকরণের উপর নিবিড় গবেষণা করার প্রয়োজন রয়েছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এর উপর কাজ হচ্ছে, দেশে বিচ্ছিন্নভাবে প্রযুক্তি ও আসছে কিন্তু ইন্ডাস্ট্রি এর ডিমান্ড যথাযথ ভাবে আলোচনায় উঠে আসছে না। দেশে মৎস্যখাত নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে একে অগ্রাধিকার তালিকায় নিতে হবে।
বার্ড এর সাবেক পরিচালক ড. আনোয়ার জাহিদ আলোচকবৃন্দের বক্তব্যের উদৃতি দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণ বিশেষ করে শুকনো মাছের উৎপাদনের অতীত ও বর্তমান অবস্থার উপর কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের পরিচালিত গবেষণা ও সমীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফলের উপর আলোকপাত করেন। ভেলু চেঞ্জ এনালাইসিস সমীক্ষার মাধ্যমে যারা মৎসজীবি, ট্রলার মালিক, মাছ ও শুঁটকি বিক্রয়কারী মার্চেন্ট এজেন্ট মধ্যস্বত্ব ভোগী যেমন: আড়ৎদার, পাইকার, খুচরা ব্যবসায়ী, সংরক্ষনকরি ও মহাজন তাদের প্রতি কেজি বা ১০০ কেজিতে মুনাফা বা লাভের অংশ নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
এতে মার্কেটিং চ্যানেলে জড়িত অধিক সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করা যাবে এবং এতে সরকারি বিভাগ ও বাজার নিয়ন্ত্রণকারীরা তাদের ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে..মাছ ধরার এলাকায় মাছ সংরক্ষণ (স্টোরেজ) এবং স্থানীয়ভাবে শুঁটকি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে তা অভ্যন্তরীণ ত্রেতা-ভোক্তার সাশ্রয় ও রপ্তানি বাজারে এর অধিক সুফল পাওয়া যাবে,
প্রশিকার প্রোগ্রাম, পরিচালক ,সাঈদ হাসান পরিবেশগত অবক্ষয় এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সমুদ্র উপকুলের আদিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নের উপর জোরারোপ করেন।
কনসালটেন্ট বাবু অশোক সরকার বলেন, মৎস্যখাতের মার্কেটিং চেইনে মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে প্রোডাক্টের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে এর প্রভাব পড়ছে ভোক্তাদের উপর. এ খাতে শ্রমিক কল্যাণ অনেক অবহেলিত এবং নারী শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এর পরিচালক আবেদ আহসান সাগর বলেন, বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় মাছের বাজার প্রায় ৮০ ভাগ। টেকনোলজি ব্যবহার, প্রক্রিয়া ও গুদামজাত করণে মধ্যস্বত্ব ভোগীদের কারণে পণ্যের দাম বেড়ে যায়, প্রোডাক্টের মূল্য পেতে ও দীর্ঘ সূত্রিতা হয় ও সঙ্কট তৈরি হয়. সরকারের সাবসিডি ছাড়া এ খাতের টেকসই উন্নয়ণ কোনোভাবেই সম্ভব নয়.
মাহবুব উল আলম বলেন স্থানীয়রা মৎস খাতের ব্যবসায় পারিবারিকভাবে এ পেশাকে গ্রহণ করে. এখনো শিক্ষিত লোকজন এ পেশায় আসছেন না তাই প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণ ও বিলম্বিত হচ্ছে, মেটেরিয়ালের দাম বৃদ্ধির কারণে মূল্যও বেড়ে যাচ্ছে এবং এগুলো মনিটরিং এর কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই। মৎস্যখাতকে দেশে বিদেশে ব্র্যান্ডিং করতে সংশ্লিষ্টদের সহায়তা দরকার।
সভাপতি দেলোয়ার জাহিদ বলেন দারিদ্র্য বিলোপ, ক্ষুধা মুক্তি, সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ, জলবায়ু কার্যক্রম এবং জলজ জীবনকে অর্থবহ ও সমূদ্র অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশকে কানাডার মতো উন্নত দেশের অংশীদারিত্ব গ্রহণের উপর জোর দিতে হবে.
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ ও আলোচনার উপর ভিত্তি করে সমস্যা সমাধানে কিছু সুপারিশমালা প্রনয়ণ করা হয়: বাংলাদেশে সামদ্রিকখাদ্য ও শুঁটকি উৎপাদন গতানুগতিকভাবে চলে আসছে। দেশের অভ্যন্তরে এবং বাইরে তাদের চাহিদা ও অনেক বেড়েছে। অতীতে শুঁটকি খোলা জায়গায় শুকানো হতো এবং রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে মৎস্য অধিদপ্তর, চেম্বার অব কমার্স ও কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নানাবিদ উদ্যোগ নেয়ার ফলে উৎপাদন প্রক্রিয়া ও বিপণন ব্যবস্থায় উন্নতি ঘটছে। দেশের অভ্যন্তরে সুটকির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি কিছু সংখ্যক শুঁটকি যেমন চিংড়ি, ছুড়ি, লোট্ট্রা রূপচাঁদা প্রভৃতি চায়না হংকং হয়ে আমেরিকা, কানাডায় রুপ্তানি হচ্ছে। উপলব্দ কতিপয় বিষয়ে সুপারিশমালা তোলে ধরা হলো :
১. বাংলাদেশের বিশাল সুমুদ্র সীমার মধ্যে প্রায় ৮০ মিলিয়ন মেট্রিকটন মাছের মুজুদ রয়েছে এর থেকে আহরণের পরিমান মাত্র ৩.৫৫ মিলিয়ন মেট্রিকটন এর প্রেক্ষিতে বেশি মৎস আহরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
২, মৎস্য আহরণে আধুনিক প্রযুক্তি ও জনবল বৃদ্ধি, বিদেশী শুঁটকিতে করারোপ সহ উন্নত মানের উৎপাদন, সংরক্ষন, প্রক্রিয়া ও বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।
৩. সরকারি উদ্যোগে প্রধান মৎস আহরণ, শুটকি উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে সংরক্ষণাগার তৈরি করাও প্রয়োজন।
৪. সমন্বিত উদ্যোগ, টেকসই প্রযুক্তি, অ্যাকশন রিসার্চ ও ভ্যালু চেইন এনালিসিস করে সমীক্ষা প্রকাশ করাও প্রয়োজন।
৫. উৎপাদন ও রপ্তানিকে বেগবান ও উৎসাহিত করতে স্বল্প সুদে ঋণদান ও প্রয়োজনে ভূর্তকি প্রদান করা যেতে পারে।
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : লস এঞ্জেলেস প্রতিনিধি: লস এন্জেলেস অবস্থানরত বাংলাদেশী ছাত্রদের সাথে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ লস এ...বিস্তারিত
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : শরীফুল হক : গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪ রোববার লিটল বাংলাদেশ সংলগ্ন সাইনটোলজি অডিটরিয়ামে জাতীয় জনত...বিস্তারিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : : ক্যালিফোর্নিয়া প্রতিনিধিঃ আগামী ১৮ই নভেম্বর বরেন্য লেখক চলচ্চিত্রকার এবং সংগঠক ইসমাইল হোসেন " ...বিস্তারিত
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : মো: শরীফ ভূইয়া, নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অভিযান চালিয়ে ৩৯৭ বোতল ফেনসিডিল...বিস্তারিত
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : নূর আমিনা : ফিলিস্তিনের নিরীহ জন সাধারণের বর্বরচিত নৃশংস হামলা ও হত্যা কান্ডের প্রতিবাদে চট...বিস্তারিত
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : মোঃ জাহিদুল ইসলাম, জেলা প্রতিনিধি (পটুয়াখালী): পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবি...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 gssnews 24 | Developed By Muktodhara Technology Limited