চট্টগ্রাম   বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪  

শিরোনাম

মরণনেশা ইয়াবা ট্রানজিটের নতুন স্বর্গরাজ্য আনোয়ারা

মরণনেশা ইয়াবা ট্রানজিটের নতুন স্বর্গরাজ্য আনোয়ারা

জিএসএসনিউজ ডেস্ক :    |    ০৬:৪৮ পিএম, ২০২১-০২-১৫

মরণনেশা ইয়াবা ট্রানজিটের নতুন স্বর্গরাজ্য আনোয়ারা

এখনই কঠোর পদক্ষেপ না নিলে দেশ সয়লাব হয়ে যাবে ইয়াবায়

আবদুল গাফফার মাহমুদ :  ইয়াবার দৌরাত্ম্য কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছেনা। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান প্রতিনিয়ত ঢুকছে দেশের অভ্যন্তরে। ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। যদিও প্রায়শই খবর পাওয়া যাচ্ছে  লক্ষ লক্ষ ইয়াবা ট্যাবলেট আইন-শৃংখলা বাহিনী উদ্ধার কিংবা আটক করছে। সাথে পাচারকরী কিংবা বহনকারীরা আটক হচ্ছে। ইয়াবার সঙ্গে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের খবরও পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবরে জানা যায়, পাচারকৃত ইয়াবার শতকরা ১০ ভাগের বেশী আটক হয়না।  কী সংঘাতিক কথা! দেশের যুব সমাজ ধ্বংসের পথে চলে যাচ্ছে এই সর্বনাশা নেশার ছোবলে। আইন শৃংখলা বাহিনী তৎপর হলেও এই মরণ নেশার ট্যাবলেট  ইয়াবা দেশে প্রবেশ কোনভাবেই ঠেকাতে পারছেনা। এক পথে আসা বন্ধ করতে পারলেও পাচারকারীরা নতুন নতুন পথে আমদানী অব্যাহত রাখছে। 
এই মরণ নেশার ব্যবসার প্রতি মানুষের আর্কষণের একটাই কারণ। আর তা হলো কোনো রকমে এই ব্যবসায় সম্পৃক্ত হতে পারলেই প্রতিদিন হাতে চলে আসে কাড়ি কাড়ি “কাঁচা টাকা”। রাতারাতি বড়লোক বনে যাওয়া যায়। রিকশাওয়ালা, ঠেলাওয়ালা, ভ্যানচালক, দিনমজুর হঠাৎ প্রচুর বিত্তবৈভবের মালিক হয়ে যায়। আলীশান বাড়ীর মালিক দামী গাড়ীসহ সব ধরনের শান-শওকত আনায়াসে হাতের মুঠোয় চলে আসে। 
এই সর্বনাশা পথে কেউ একবার পা বাড়ালে তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়না। সে আর পিছন ফিরে তাকায়ও না। এক সময় কক্সবাজারের টেকনাফ ছিল ইয়াবা পাচারের স্বর্গরাজ্য। এখানে ইয়াবা পাচারে জড়িতরা রাতারাতি আলীশান বাড়ী বানিয়ে বসবাস করতে শুরু করে। রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে আইন-শৃংখলা বাহিনীর এক শ্রেণীর সদস্যও এই অশুভ ব্যবসার ফাঁদে জড়িয়ে পড়ে।  টেকনাফের  এমপি বদি ও তার আত্মীয়-স্বজনের নামও  উঠে আসে এই অনৈতিক  ব্যবসার সাথে  জড়িত হয়ে পড়ার। এই টেকনাফে দুই শতাধিক লোকের  ক্রসফায়ারে পড়ার কাহিনী চলে আসে পত্রিকান্তরে। এই ইয়াবা পাচারের তথ্যচিত্র বানাতে টেকনাফে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা।  সিনহা হত্যায় জড়িত অভিযোগে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য এখন জেলে।  আইন-শৃংখলা বাহিনীর তৎপরতায় টেকনাফে ইয়াবা পাচার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। 
সম্প্রতি উদ্বেগজনক একটি খবর ছাপা হয়েছে সহযোগী একটি দৈনিকে। খবরের শিরোনামটি হলো- “ ইয়াবা পাচারের নতুন জোন  আনোয়ারা।”  খবরে বলা হয়েছে, ইয়াবা পাচারের নতুন জোনে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রামের  আনোয়ারা উপজেলা। মিয়ানমার থেকে সমুদ্রপথে আসা ইয়াবা চালানগুলো আনোয়ারার ট্রানজিট পয়েন্ট হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ইয়াবার নতুন রুটের সন্ধান পাওয়ার পর আনেয়ারার উপকূলে তৎপরতা বড়ানো হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মুজিবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, “ আনোয়ারার উপকুলে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের তৎপরতা আমরা অবগত। তাই ওই এলাকায় আমাদের তৎপরতাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু চালান আটকও করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আনোয়ারার একাধিক রাজনৈতিক নেতা বলেন, “ইয়াবা ব্যবসার চিন্তা করলে আনোয়ারার কাছে এখন টেকনাফও হার মানবে।” আনোয়ারা হয়েই এখন ইয়াবা ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। ইয়াবা ব্যবাসার বদৌলতে  অনেকে কোটি কোটি টাকার মালিক। যে দিনমজুর একসময় কেনোভাবে সংসার চালাতো সে এখন বাস করছে আলিশান বাড়ীতে। চড়ে দামী গাড়ীতে।  অনুসন্ধানে জানা যায়,  কক্সবাজারের সীমান্ত  এলাকায় প্রশাসন মাদক বিরোধী তৎপরতা বৃদ্ধি করার পর নতুন ট্রানজিট পয়েন্ট হিসাবে  চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার উপকূল  ব্যবহার করছে মাদক ব্যবসায়ীরা। মিয়ানমার থেকে সমুদ্রপথে ইয়াবার চালান সেন্টমার্টিন দ্বীপ কিংবা পাশের  সমুদ্র এলাকায় পৌছে দেয় মিয়ানমার ভিত্তিক ইয়াবা সিন্ডিকেটগুলো।  এরপর এর চালান ফিশিং ট্রলারে নিয়ে আসা হয় আনোয়ারা উপকূলে। চালানগুলো উপকূলের  পারকি, সিইউএফএল থেকে শুরু করে বরুমচড়া পর্যন্ত কমপক্ষে ১০টি পয়েন্টে খালাস হয়। এসব পয়েন্টের মধ্যে পারকি সমুদ্র সৈকত, গহিরা, দক্ষিণ  গহিরা ,  ঘাটকুল,  বরুমচড়ার  ভরাচর, উত্তর মইদন্ডী  অন্যতম। ইয়াবার   ট্রানজিট  পয়েন্ট হিসাবে পরিচিতি পাওয়ায়  আনোয়ারায় ইয়াবা ব্যবসায় সম্পৃক্ত  হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ আগে যাদের   নুন আনতে পানতা ফুরাতো, ইয়াবার  বদৌলতে  সেই  রিকশা চালক,  ভ্যানচালক , সিএনজিচালক , জেলে, দিনমজুররা পরিণত হয়েছে  কোটি টাকার  মালিকে। দু’এক  বছরের ব্যবধানে  তারা   তৈরী করেছেন  আলিশান বাড়ি, ব্যবহার করছে দামি গাড়ি।  বাদ যাননি  স্থানীয় রাজনীতি  জনপ্রতিনিধিরাও।  এ কাজে  নেমেছেন  বিভিন্ন ধর্মীয়  প্রতিষ্ঠানের  সঙ্গে  সম্পৃক্ত গন্যমান্য ব্যক্তিরাও। এরই মধ্যে কারও  কারো নাম উঠে এসেছে প্রশাসনের তৈরি  মাদক ব্যবসায়ী তালিকায়।
এলাকার একাধিক সূত্রমতে, আনোয়ারা উপজেলা প্রশাসনের উর্ধতন এক কর্মকর্তা ইয়াবা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। তার চলাফেরা অনেকটা সন্দেহজনক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তৈরী তালিকায় থাকা মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে  আছে আনোয়ারার  তোহিদুল ইসলাম , আবুল ফয়েজ, মোঃ সেলিম ওরফে পাগলা সেলিম , শেখ  মোহাম্মাদ ইসহাক,নাজিম উদ্দিন,মোঃ রফিক, জাফর উদ্দিন, আবদুস সবুর, সাদ্দাম  হোসেন সহ অনেকে। পুলিশের এক কর্মকর্তার দাবী, আনোয়ারার উপকূলের সাঙ্গু নদের মোহনায় দক্ষিণ  গহিরা ঘাটকূল  এলাকাটি প্যারাবনবেষ্টিত। যোগাযোগ ব্যাবস্থা নাজুক। তাই প্রশাসন  চাইলেও এ এলাকায়  অভিযান  চালাতে পারেনা। এ সুযোগ এলাকাটিকে ইয়াবার স্বর্গরাজ্যে   পরিণত  করেছে পাচারকারীরা। মিয়ানমার থেকে সবচেয়ে বেশী ইয়াবার চালান আসে এ এলাকায়। বিশেষজ্ঞদের মতে মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ  অধিদপ্তর পুুলিশ , বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট সবার নড়েচড়ে বসা উচিত। টেকনাফের ন্যায় এই এলাকায় গড়ে তুলতে হবে  নিñিদ্র নিরাপত্রা ব্যবস্থা। কোনোক্রমেই যেন ইয়াবা কারবারিরা   তাদের তৎপরতা চালাতে না পারে সে জন্য সকলকে চোখ  কান খোলা রেখে  সর্বদা তৎপর থাকতে হবে। ইতিমধ্যে যারা এই অবৈধ কারবারে  জড়িয়ে পড়েছে  তাদের  প্রত্যেককে  আইনের আওতায়  আনতে  হবে। মনে রাখতে হবে আনোয়ারায়  তৎপরতা চালাতে  গিয়ে আবার টেকনাফ,  ঢিলেঢালা না হয়ে যায়। এ ছাড়া সরকারের  পক্ষ থেকে কূটনৈতিক  তৎপরতা চালিয়ে মিয়ানামার  সরকারকে চাপ দিতে হবে। তারা  যেন ইয়াবা  তৈরীর কারখানাগুলো চিহ্নিত কারে তা বন্ধ করে দেয়। কারণ একমাত্র সীমান্ত এলাকায়ই  এই কারখানাগুলো  অবস্থিত। এসব  কারখানায় তৈরী ইয়াবার এক পিসও মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঢুকতে পারেন্ াসেখানে লাখ টাকা দিয়েও কেউ একটি টেবলেট জোগাড় করতে পারবেনা। মিয়ানমারের কতিপয়  সেনা সদস্যসহ অন্যান্য  সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সহযোগিতায়ই  ইয়াবা বাংলাদেশে আসে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ব্যতীত এটি বন্ধ করা সম্ভব নয়। 
যেমনটি ভারতের  সীমান্তবর্তী এলাকায় ফেনসিডিল তৈরীর কারখানা গড়ে তোলার  অভিযোগ রয়েছে। যদিও ইদানিং ফেনসিডিলের তৎপরতা একটু কমে এসেছে। আগামী দিনগুলোতে  এই ফেনসিডিল কারখানাগুলো বন্ধ হওয়া উচিত। এ লক্ষ্যেও কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার হওয়া উচিত।

রিটেলেড নিউজ

৬৫০ অসচ্ছল পরিবারের মাঝে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ

৬৫০ অসচ্ছল পরিবারের মাঝে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ

জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : বেলাল উদ্দিন আহম্মদ. মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কা...বিস্তারিত


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাংবাদিক মশাহিদ আহমদ এর জামিনে কারামুক্তি : পরবর্তী শুভেচ্ছা সমাবেশ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাংবাদিক মশাহিদ আহমদ এর জামিনে কারামুক্তি : পরবর্তী শুভেচ্ছা সমাবেশ

জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : চিনু রঞ্জন তালুকদার, মৌলভীবাজার ঃ স্কয়ার গ্রুপের লীজকৃত বড়লেখার “শাহবাজপুর চা বাগান” কর্তৃক &ldq...বিস্তারিত


রায়গঞ্জ যুবলীগ ও সেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

রায়গঞ্জ যুবলীগ ও সেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : শামীম আকতার রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ যুবলীগ সভাপতি জাহিদুল ইসলাম মাইক...বিস্তারিত


মুরাদনগরে গনহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

মুরাদনগরে গনহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : বেলাল উদ্দিন আহাম্মদ, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: ২৫মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন...বিস্তারিত


চকরিয়ায় বসত ভিটা থেকে বিধবাকে উচ্ছেদের চেষ্টা ও প্রাণনাশের হুমকি : নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি

চকরিয়ায় বসত ভিটা থেকে বিধবাকে উচ্ছেদের চেষ্টা ও প্রাণনাশের হুমকি : নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি

জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের চকরিয়ায় এরফান আরা বেগম (৬৯) নামে এক অসহায় বিধবাকে তার স্বামীর ব...বিস্তারিত


মানবিক  সহায়তার আবেদন আমিরুলের

মানবিক  সহায়তার আবেদন আমিরুলের

জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : শরীফুল হক : গ্রামের সাধারণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আমিরুলের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। বিগত ২০২২ সালের সেপ...বিস্তারিত



সর্বপঠিত খবর

পিবিসির ইতিহাসে প্রথম নারী সভাপতি রাবাব ফাতিমা

পিবিসির ইতিহাসে প্রথম নারী সভাপতি রাবাব ফাতিমা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : : জাতিসংঘ শান্তিবিনির্মাণ কমিশনের (পিবিসি) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স...বিস্তারিত


অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খোশনবীশের দুরদর্শীতায় মীরপুর বাংলা স্কুল এ্যান্ড কলেজের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্মাননা লাভ

অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খোশনবীশের দুরদর্শীতায় মীরপুর বাংলা স্কুল এ্যান্ড কলেজের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্মাননা লাভ

জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : আসাদুজ্জামান বাবুল : গ্রীক বীর 'আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেট' ভারতীয় উপমহাদেশে পদার্পণ করেই এখনকার প...বিস্তারিত



সর্বশেষ খবর