শিরোনাম
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : | ০৭:৪০ পিএম, ২০২৩-০১-১৬
বেলাল উদ্দিন আহাম্মদ, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: ডাকাতি না করেও ডাকাত অপবাদ দিয়ে গণপিটুনি দিয়ে দু’যুবককে হত্যা করা হয়েছে।কুমিল্লার মুরাদনগরে বেড়াতে আসা জামাতা ও তার এক বন্ধুকে ডাকাত অপবাদ দিয়ে গনপিটুনিতে হত্যা করেছে দাবী নিহতদের পরিবারের । চাঞ্চল্য এ ঘটনার চারদিন পার হলেও এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। মামলা না হওয়ায় সাধারন মানুষদের মঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্ঠি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) কুমিল্লা থেকে উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের পালাসুতা গ্রামে শ^শুর বাড়িতে ওয়াজ মাহফিল উপলক্ষে বেড়াতে আসেনুরু মিয়া ও তার বন্ধু ইসমাঈল হোসেন এবং অপর বন্ধু শাহজাহান।
ডাকাত অপবাদ দিয়ে জামাতা নুরু মিয়া(২৮) উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে ও বন্ধু ইসমাইল হোসেন(২৭) একই উপজেলার পালাসুতা গ্রামের মৃত. গিয়াস উদ্দিনের ছেলেকে গণপিটুনিদিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অপর বন্ধু আহত শাহজাহান (২৮) জেলার সদর দক্ষিন থানার বাগমারা গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে মুমূর্ষ অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। নুরু মিয়া কুমিল্লা শহরে রিকশা চালাতেন এবং ইসমাঈল ও শাহজাহান কুমিল্লাতেই রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে করে জানা যায়, উপজেলার পালাসুতা গ্রামের নিহত ইসমাইল হোসেনের পরিবারের সাথে জমি সংক্রান্ত ও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার আপন চাচা সিরাজুল ইসলাম শেখ সাহেব এবং প্রতিবেশী আলাউদ্দিন আলা নামের এক মাদক ব্যবসায়ীর দ্বন্দ ছিল। নিহত ইসমাঈলের পরিবারদের বসবাসরত বাড়িটি আলাউদ্দিনের বাড়ির পাশে হওয়ার কারনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। তাই পরিকল্পিতভাবেডাকাত সন্দেহের ঘটনা সাজিয়ে এই গনপিটুনির ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়।
স্থানীয় সুত্রে জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে কেউটগ্রাম গ্রামে ডাকাতি করতে এসে ধাওয়া খেয়ে ডাকাত দলের ৩ সদস্য পালাসুতা গ্রামের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে এমন খবর এলাকার মাইকে ঘোষনা করা হয়। এই ঘোষনার পর আশপাশের কয়েক গ্রামের শতাধিক লোকজন জড়ো হয়ে ডাকাত সন্দেহে নাবু মিয়ার ঘর থেকে তার মেয়ের জামাইনুরু মিয়া ও নুরু মিয়ার দুই বন্ধু ইসমাঈল হেসেন এবং শাহজাহানকে ডাকাত সন্দেহে ঘর থেকে বাহিরে এনে গণপিটুনি দেয় এলাকাবাসী। এতে তিনজনই গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে মুরাদনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজনের মৃত্যু হয়।
ওই রাতে গনপিটুনিতে আহত শাহজাহান বলেন, ঘটনার দিন পালাসুতা গ্রামে অনুষ্ঠিত ওয়াজ মাহফিল শুনার উদ্দেশ্যে কুমিল্লা থেকে কাজিয়াতল গ্রামে আসি। প্রথমে আমার বন্ধু নুরু মিয়ার অসুস্থ বাবাকে দেখতে যাই তার বাড়িতে। পরে নুরুর মিয়ার শশুর বাড়িতে থাকা তার ছেলেকে দেখতে আমরা পালাসুতা গ্রামে যাই। পরে রাত ১০টার দিকে পালাসুতা গ্রামে নূরুর শ^শুরের বাড়িতে ঘরে বসে সকলের সাথে কথা বলছিলাম ঠিক তখনই কিছু লোক এসে আমাদের ডাকাত বলে ঘর থেকে টেনে-হিচরে বাহির করে ডাকাত বলে মারতে থাকে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচারের দাবি করি।
নিহত নুরু মিয়ার মা জাহানারা বেগম ও শ্যালিকা ইয়াসমিন বেগম অভিযোগ করে বলেন, নুরু কুমিল্লায় পরিবার নিয়ে থাকেন। শুক্রবার রাতে সে ও তার দুই বন্ধু মাহফিলের কারনে রাত ৯টার দিকে গ্রামের নিজ বাড়িতে আসে। মায়ের সাথে দেখা করে শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে চলে যায় এবং সাড়ে ৯টার দিকে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে মোবাইল ফোনে তার শ^শুর ও শাশুরির সাথে তার বাড়ির লোকজনের সাথে কথা বলায়। নুরুর বিরুদ্ধে এর পূর্বে এলাকায় ও এলাকার বাহিরে এমনকি পুলিশি কোন অভিযোগও নেই। তাদেরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত ইসমাঈলের মা মিনোয়ারা বেগম বলেন, আমাদের পরিবারের সাথে ইসমাঈলের চাচার সিরাজুল ইসলাম শেখ সাহেবের সাথে জমিসহ বিভিন্ন বিষয়ে পূর্ব থেকে বিরোধ ছিলো। আর আমাদের বাড়ির প্রতিবেশি আলাউদ্দিন একজন মাদক ব্যবসায়ী। আমরা যখন তাদের বাড়ির পাশে বাড়ি করি তখন থেকে তারা আমাদের হুমকি দিতো এখান থেকে চলে যেতে। কারন আমাদের কারনে তাদের মাদক বিক্রিতে সমস্যা হচ্ছিলো। এই ঘটনার পূর্ব থেকে শেখ সাহেবের স্ত্রী আমাদের বাড়িতে না আসলেও আলাউদ্দিনের বাড়িতে আসাযাওয়া করতেন। ঘটনার সময় শেখ সাহেব ও তার ছেলে এবং আলাউদ্দিন ও তার স্ত্রী উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দেয়। এবং ঘটনার সময় আলাউদ্দিনের স্ত্রী বলে আমার ছেলে নাকি খারাপ ও চুর তাই প্রকাশ্যে মেরে ফেলার নির্দেশ দেয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম শেখ সাহেব পূর্বে থেকে চলা বিরোধ ও ঘটনার স্থলে থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ঘটনার সময় আমি মানুষের মুখে ডাকাত আটক করা হয়েছে শোনে ঘটনার স্থলে যাই কিন্তু তাদেরকে হত্যার সাথে আমি ও আমার ছেলে জড়িত থাকার বিষয়টি মিথ্যা। তিনি আরো বলেন, আলাউদ্দিন একজন মাদক ব্যবসায়ী। আমার ভাই (ইসমাঈলের বাবা) যখন আলাউদ্দিনের বাড়ির পাশে জমি কিনে বাড়ি করে তখনই বাড়ি না করতে আলাউদ্দিন হুমকি দিচ্ছিলো। আলাউদ্দিনের সাথে আমার ভাইয়ের পরিবারদের তখন থেকেই বিরোধ চলছে।
অপর অভিযুক্ত আলাউদ্দিন আলা বলেন, আমার স্ত্রী আমারমেয়ের সাথে বলছে এসব রেখে লাভ নেই মাইরা ফেলুক। মারধরের ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম না। পুলিশ আসার পর ঘটনারস্থলে আমি ও আমার স্ত্রী যাই। এখন পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ও এলাকাবাসির ইন্দনে এখানে আমার নাম জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আমিও চাই এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত সবার শাস্তি হোক।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নাই। আজ কালকের মধ্যে ভিকটিমের পরিবার থানায় এসে মামলা দায়ের করবে করবে। এ ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ পুলিশের সকল টিম কাজ করছে। তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : নুর আমিনা : স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান'র ১০৪ তম জন্ম বার্...বিস্তারিত
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : মো: শরিফ ভূইয়া,রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, আওয়ামীলীগ, র...বিস্তারিত
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : বেলাল উদ্দিন আহম্মদ: কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল জনকল্যাণ ফোরামের উদ্যোগে ২৪ জন মেধাব...বিস্তারিত
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : শাহ আলম শফি : চট্টগ্রাম বিভাগে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্স শ্রেষ্ঠ স্থান অর্জন করায় বরুড়...বিস্তারিত
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : মো.শামীম আক্তার,রায়গঞ্জ(সিরাজগঞ্জ): স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ি ভোক্তার স্বার্থে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্...বিস্তারিত
জিএসএসনিউজ ডেস্ক : : শরীফ ভূইয়া,রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রূপগঞ্জ ইউনিয়নে &...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 gssnews 24 | Developed By Muktodhara Technology Limited